কেনো প্রতিমন্ত্রী বানানো হলো আশিক চৌধুরীকে? AshikChowdhury| BIDA
আশিক চৌধুরী সম্পর্কে যপ তথ্যগুলো আপনি জানেননা? #bangladesh #ajkerkhobor #banglanewstoday #ashikchowdhury #dryounus
হঠাৎ করেই আশিক চৌধুরীর ফোনে একটা কল আসে। মোবাইল স্ক্রিনে নাম ভেসে ওঠে ড. মোহাম্মদ ইউনুস স্যার। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সরাসরি প্রস্তাব " আশিক তুমি কি বাংলাদেশের জন্য কাজ করবে? আমাদের একটা সুযোগ এসেছে দেশকে বদলে দেয়ার, চলো কাজে লাগাই সুযোগটা।" আশিক চৌধুরী হতবিহ্বল হয়ে যান। কি বলবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেননা। কারণ তখনও তিনি খুব আরাম আয়েশের জীবন যাপন উপভোগ করছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ সিঙ্গাপুরে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা হিসেবে। একটু সময় নিলেন কিন্তু না করতে পারলেননা। বলে দিলেন হ্যা, আমি দেশে ফিরবো। দেশসেবার চেয়ে বড় সেবা আর কিইবা হতে পারে। আর সেটি যদি হয় একজন মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে।
এরপরি দেশে এলেন আশিক চৌধুরী। যোগ দিলেন
বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে। সাথে পেলেন বাড়তি আরও একটি দায়িত্ব।তাহলো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজা।
এরপর নেমে পড়লেন দেশের ভঙ্গুর অথনীতিকে ঢেলে সাজাতে। একের পর এক আসতে শুরু করলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই সাতমাসে কত বড়বড় কাজ করেছেন আশিক তা জানেন?
ইতিমধ্যেই সে স্টারলিং নিয়ে এসেছে। হ্যা তার কথাতেই বাংলাদেশে স্টারলিং নিয়ে এসেছে-- ইলন মাস্ক। ইতোমধ্যে নাসার সাথে চুক্তিতে চলে গিয়েছে। বিনিয়োগ হিসেবে বাহিরের একটা ব্যাংকের সাথে চুক্তি হয়েছে এই বছর ১০০ কোটি ডলার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে।
৫টা বিশালাকার মালবাহী জাহাজ কিনে নিয়েছে, রিভার ম্যানেজমেন্টের প্লান তৈরি করে বিশাল বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে; ৪ টা আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল (বিদেশী বিনিয়োগে) তৈরির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে; ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ইলেকট্রনিক ট্রেন অথবা বুলেট ট্রেন চালুর জন্য বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
ইতিমধ্যেই ১০টা বৃহত্তর ইকোনমিক জোন তৈরি কার্যক্রম চলছে..
তার লক্ষ্য ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আসা এই দেশে। যা দেশের ৩ কোটি মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দিবে। কম হলেও ১ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ইতোমধ্যে কাজের পুরস্কার হিসেবে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেয়ে গেছেন যেখানে অন্য উপদেষ্টাদের জায়জায় অবস্থা।
ভাই মাত্র কয়েক দিনে এগুলা করেছে সে। যদি সে ৩৬৫ দিন কাজ করার সুযোগ পায় চিন্তা করছেন কই যাবে তার উদ্যোগগুলা।
এই লোকটা প্রফেসর ইউনুসের থেকেও বড় খেলোয়াড়। দেশ যদি কোনোদিন আমূল বদলে যায়, তোমরা ইউনুসের সাথে আশিক চৌধুরীর নামটা উচ্চারণ করতে ভুলো না।
মহান এই ব্যক্তির কাজ নিয়ে তো অনেক জানা হলো। এবার জানি তার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে।
আশিক চৌধুরীর জন্ম চাঁদপুর। তবে বাবার চাকরির সুবাদে তার শৈশব কেটেছে যশোরে। তিনি সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি লন্ডন বিজনেস স্কুল থেকে ফাইন্যান্সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট (সিএফএ) সার্টিফিকেট লাভ করেন।
আশিক চৌধুরী তার কর্মজীবন শুরু করেন ২০০৭ সালে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে টেরিটরি অফিসার হিসেবে। এরপর তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে লেন্ডিং স্ট্র্যাটেজি এবং ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং বিভাগে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। ২০১২ সালে তিনি লন্ডনে আমেরিকান এয়ারলাইন্সে ফিনান্সিয়াল ও স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিস্ট হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১৯ সালে ইউরোপ ও এশিয়ার ফাইন্যান্স প্রধান হিসেবে পদত্যাগ করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও কাজ করেছেন এবং গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ছিলেন।
পেশাগত জীবনের বাইরে আশিক চৌধুরী একজন স্কাইডাইভার। মেমফিসে তিনি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ৪১,৭৯৫ ফুট উচ্চতা থেকে জাম্প করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে 'গ্রেটেস্ট ডিস্টেন্স ফ্রি ফল উইথ এ ব্যানার বা ফ্ল্যাগ' শিরোনামে রেকর্ড অর্জন করেন।এছাড়াও তার বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স রয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নাবিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তাদের একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে রয়েছে। আশিক চৌধুরীর এই নিযুক্তি বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।