নতুন দলে যোগ দিবেন শিবির নেতা সিবগাতুল্লাহ?
বলা হয় ইসলামি ছাত্রশিবির স্মার্ট ও মেধাবীদের এক অপূর্ব সমন্বয়। আসলেও তাই। এতদিন বিষয়টি আড়ালে থাকলেও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর একেএকে প্রকাশ্যে আসছেন এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম এই ছাত্রসংগঠনটির নেতারা। যাদের কেউ দেশসেরা, কেউবা ক্যাম্পাস সেরা। কেউ ডিপার্টমেন্টে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট কেউবা আবার এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজে।
তেমনি একজন সিবগাতুল্লাহ সিবগা। প্রথম দেখায় তাকে মনে হতে পারে তুকি কোনো হিরো। চেহারা-সুরত, চলন-বলন আর কথা-বাতায় একেবারি অন্যরকম। তার সতীর্থরা বলছেন, মন মানসিকতায়ও সিবগা অন্য আর দশজনের চেয়ে আলাদা। মানবিক মানুষ হিসেবেও বন্ধু মহলে বেশ পরিচিতি আছে তার। নিরাপত্তার কারণে এতদিন আড়ালে আবডালে থাকলেও গণঅভ্যুত্থানের হঠাৎ করেই প্রকাশ্যে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সাবেক এই সভাপতি। যিনি বতমানে দায়িত্ব পালন করছে কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে।
জানা যায়, ২০২২-২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন সিবগাতুল্লাহ। পরে হন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেনন সিবগাতুল্লাহ। মুলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রের নিয়মিত যোগাযোগ এবং আন্দোলনের রোডম্যাপ তৈরির সবটুকুই তিনি সমন্বয় করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের ততকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম ও সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদকে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দিতেন সিবগাতুল্লাহ।
সিবগাতুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী যার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। তারা দুই ভাইবোন। বোন তানজিম আরা বিবাহিত। যদিও সিবগাতুল্লাহ সিবগা এখনও বিয়ে করেননি।
সিবগাতুল্লাহ সিবগাকে বলা হয় শিবিরের বিজ্ঞানী। তিনিই সারাদেশে ছাত্রশিবিরের আয়োজনে সায়েন্স ফেস্ট, সাহিত্য সংস্কৃতি উৎসব, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এসব ক্রিয়েটিভ আয়োজনের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছেন। এমনকি জাতিসংঘ থেকে আসা মানবাধিকার কর্মীরা জুলাই গনঅভ্যুত্থানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য বিশেষ বৈঠক করেছিলেন ছাত্রশিবিরের এই নেতার সাথেই। কেনোনা সে-সময়কার বেশিরভাগ কমসূচীরি সমন্বয় করেছেন সিবগাতুল্লাহ।
সিবগাতুল্লাহ শুধু দেশীয় নয় আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে শিবিরের কমসুচী বাস্তবায়নের কৌশল নিধারন করে থাকেন। দপ্তরের দায়িত্বে থাকলেও শিবিরের হয়ে আন্তর্জাতিক এরেনায় সুনামের সাথে কাজ করেছেন তিনি। একারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এম্বেসিগুলোতে নিয়মিত যাতায়াত করেন সিবগাতুল্লাহ।
সুদশন হওয়ায় অবশ্য বেশ ঝামেলাও পোহাতে সিবগাতুল্লাহ সিবগার। কেনোনা তিনি ঢাবি ক্যাম্পাসে রমনীদের ক্রাশ হিসেবেও বেশ সুনাম কুরিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে সিঙ্গেল হওয়ায় প্রতিদিনই সুন্দরী মেয়েদের কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পান সিবগা। বিয়ের প্রস্তাব আসে অভিভাবকদের থেকেও।
সিবগাতুল্লাহ সিবগা সিবগাতুল্লাহ সিবগা পরের সেশনে শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক হবেন এটা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু এরপর কোন দলে যোগ দিবেন তিনি? তার অন্য বেশিরভাগ পূর্বসুরীদের মতো বাংলাদেশ জামাতে ইসলামিতে যাবেন নাকি ছুটবেন নতুন কোনো গন্তব্যে? সিবগাতুল্লাহর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি ছাত্র শিবির থেকে সাবেক হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিবেন৷ কেনোনা তিলেতিলে তাকে গড়ে তোলা হয়েছে মুল সংগঠন থেকেই। তবে জামায়াত যেহেতু বহুমুখী এবং দূরদর্শী দল সেক্ষেত্রে অন্য কোনো সেক্টরেও তাকে কাজে লাগানো হতে পারে। সেটা হউক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কিংবা আআন্তজার্তিক মানের স্কলার হিসেবে। আবার সম্ভাবনা আছে ছাত্রশিবিরের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ইউনাইটেড পিপলসে যোগ দেয়ারও। কেনোনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়ক ও মাস্টারমাইন্ডদের নিয়েই গঠিত হচ্ছে এই দলটি। যা ইতোমধ্যে অজন করেছে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও।
সিবগাতুল্লাহ সিবগা পুরোদমে রাজনীতিতে থাকলে জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি তার নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়েও সক্রিয় হবেন। সেক্ষেত্রে জাতি হয়তো পাবে একজন স্মার্ট ও দক্ষ সংসদ সদস্য।