কি নাম সাবেক শিবিরে নতুন দলের? কারা থাকছেন নেতৃত্বে? SabekShibir | NewParty
কি নাম সাবেক শিবিরে নতুন দলের? কারা থাকছেন নেতৃত্বে?
#chhatrashibir #jamat_e_islami #banglanewstoday #sabekshibir #newparty
অপেক্ষার পালা শেষ। অবশেষে এলো ঘোষণা। বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের নেতৃত্বে রাজনীতির মাঠে নামছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ বা আপ বাংলাদেশ। বাংলায় অনুবাদ করলে অথ দাড়ায় ঐক্যবদ্ধ মানুষের বাংলাদেশ। দশক মুল আলোচনায় যাওয়ার আগে অনুরোধ রাজনীতির ভিন্নমাত্রার বিশ্লেষণ পেতে চ্যানেলটিতে নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন।
অনেক জল্পনা ছিলো, ছিলো আশংকা আর ভয়ও। প্রাথমিক ঘোষণার পর চারদিক থেকে সহযোগীতা যেমন এসেছে সাথে এসেছে হাসি, ঠাট্রা, ট্রোল। কিন্তু তাতে থেমে থাকেননি শিবিরের সাবেক নেতারা। তারা এগিয়ে গেছেন দূবার গতিতে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া রুপসা থেকে পাথুরিয়া সবখানেই নতুন রাজনৈতিক দলের সংগঠকদের নিয়ে দলের ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করেছেন। পেয়েছেন অভুতপূব সাড়াও।
নতুন দলের সম্ভাব্য কেন্দ্রীয় সভাপতি যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের একসময়ের ডাকসাইটে সভাপতি ছিলেন সেই আলি আহসান জুনায়েদ ছুটে বেরিয়েছেন দেশের আনাচে কানাচে৷ সাথে প্রতিটা জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতেও পাঠিয়েছেন টিম।
এব্যাপারে আলি আহসান জুনায়েদ বলেন,
জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত হতে যাওয়া আসন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের নাম আমরা ঠিক করেছি ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ।
এখানে জুলাইয়ের আকাঙ্খা বলতে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, যেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের আপামর ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে প্ল্যাটফর্মটি এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
পিলখানা, শাপলা ও জুলাইয়ের মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এবং জুলাইয়ের আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার দাবীতে জনমত ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা এই প্ল্যাটফর্মের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হবে৷
বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন এই প্ল্যাটফর্মের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা।
রাজনীতিতে পেশিশক্তির দাপট, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক অর্থনীতির যেই বৃত্ত, দীর্ঘমেয়াদে আমরা তা উপড়ে ফেলতে চাই।
৪ টি রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার অঙ্গীকার থাকবে এই প্ল্যাটফর্মের প্রস্তাবনায়--- ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শক্তির এই প্ল্যাটফর্মটি।
বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক আজাদি এবং বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রস্তাবনা থাকবে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এই উদ্যোগে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহবান জানাই।
জুনায়েদ বলেন৷ নতুন দলটি ইতোমধ্যে অনলাইনে সদস্য ফরম ছেড়েছে যেখানে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ সদস্য হয়েছেন। সংগঠক, দাতা, সমর্থক হিসেবে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি দলের সাথে থাকা যাবে বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তাকারী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট হিসেবেও। নতুন রাজনৈতিক দলটির আদশ হবে মধ্যমম ইসলামপন্থী। এখানে যেমন জেনারেল লাইনে পড়াশোনা করা ডাক্তার ইন্জিনিয়ার, শিক্ষকরা থাকবেন তেমনি থাকবেন মাদ্রাসা পড়ুয়া মানুষরাও। থাকবেন কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুররাও।
---
দলের প্রধান উদ্যোক্তারা ইসলামি ছাত্রশিবিরের হলেও এখানে স্বৈরাচারের সমথক ছাড়া যেকেউ যুক্ত হতে পারবেন। তবে নেতৃত্ব পাওয়ার খেত্রে অবশ্যই আল্লাহ ভিরু, সৎ ও নিষ্ঠাবান।
--
শুরুতে আহ্বায়ক কমিটি করবে নতুন এই দলটি। যেখানে আহ্বায়ক হবেন ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি আলি আহসান জোনায়েদ। আর সদস্য সচিব হতে পারেন ঢাবি শিবিরের আরেক সাবেক সভাপতি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতা রাফে সালমান রিফাত। শীষ পদে আসতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সহমুখমাত্র মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ আরেফিন, যুগ্ম সদস্য সচিব নাইম আহমেদসহ সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতারা৷ তবে এই কমিটিতে দেখা যাবে কিছু বড় চমক। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের সংগঠকরা। তারা বলছেন, ইতোমধ্যে জুনায়েদের নেতৃত্বে হতে যাওয়া দলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন শিবিরের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মীজা গালিব ও জুলাইয়ের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড সাদিক কায়েম। জোর গুঞ্জন রয়েছে শুরুতে না থাকলেও পরে এই দু'জন জনপ্রিয় সাবেক শিবির নেতারা নতুন দলে যুক্ত হবেন। আর সেটি যদি হয় তাহলে তা হবে একটি বড় মাইলফলক।
ইতোমধ্যে নানা কারণে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত হওয়া নাগরিক পার্টি ভাঙ্গনের মুখে। খোদ কেন্দ্রীয় নেতারাই একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লেখালেখি করছেন, কুৎসা ছড়াচ্ছেন। আবার চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ উঠছে অনেকের বিরুদ্ধে। এদিকে এখন পযন্ত এমন কিছু তারা দেখাতে পারেননি যা জনমানুসের ভেতর তাদের গ্রহনযোগ্য করে তুলবে। ফলে রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন এনসিপির এই ব্যথতাই নতুন দলটিকে অনেক এগিয়ে দিবে। কেনোনা এখানে যারা নেতৃত্ব দিবেন তারা প্রত্যেকেই একদিকে যেমন সাংগঠনিক অন্যদিকে সৎ ও দক্ষ। আর শিবিরের সাবেক হওয়ার কারণে সারাদেশে তাদের রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক। অনেকেই মনে করেন নাগরিক পার্টি বা নাগরিক কমিটির সারাদেশে যে কমিটি আছে তার বেশিরভাগ লোকি জোনায়েদ-রিফাত আর সাদিক কায়েমদের লোক। ফলে নতুন দল মাঠে আসলে একদিকে যেমন তাদের লোকের অভাব হবেনা অন্যদিকে জনবল সংকটে পড়বে নাগরিক পার্টি৷ ---
উল্লেখ্য আলি আহসান জোনায়েদ একসময় নাগরিক কমিটির প্রথম যুগ্মসচিব ছিলেন। কিন্তু পরে দল গঠিত হলে শিবির ট্যাগ দিয়ে বাদ দেয়া হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম এই পরিকল্পনাকারিকে।
আলী আহসান জুনায়েদ,
প্রধান উদ্যোক্তা, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ